সাধারণত স্কুল-কলেজের ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির মিটিংয়ে চা-নাস্তা দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। সেখানে প্রতি মিটিংয়ে এক-দুই হাজার টাকার নাস্তা হলেই যথেষ্ট। বছরে এই বাবদ খরচ ১০ থেকে ২০ হাজার টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়।
অথচ রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সদস্যরা গত ৯ বছরে সাড়ে ১৩ লাখ টাকার খাবার খেয়েছেন। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে।
তারা ২০১৪ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত স্কুলটির আয়-ব্যয়ের তথ্য অনুসন্ধান করে। ডিআইএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৯ বছরে জিবি’র ১৩ জন সদস্য সম্মানি নিয়েছেন ৩৩ লাখ ২৩ হাজার ৩৮৬ টাকা, তাদের আপ্যায়নে খরচ হয়েছে ১৩ লাখ ৪০ হাজার ২৮৬ টাকা এবং জিবি’র পেছনে অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয় হয়েছে ৩১ লাখ ৬৭ হাজার ৯৭৬ টাকা।
আর এই গভর্নিং বডি নির্বাচনের পেছনে ব্যয় হয়েছে ৩৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৫২ টাকা। সবমিলিয়ে এই অঙ্ক ১ কোটি ১৫ লাখ টাকার মতো। এমনকি গভর্নিং বডির সদস্যরা ৪১ হাজার টাকা করে ব্লেজারও কিনেছেন। এর এজন্য ১৩ জন সদস্য নিয়েছেন ৫ লাখ ৩৬ হাজার ৮২ টাকা।
একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করে বলেন, মতিঝিল আইডিয়ালের গভর্নিং বডির মিটিং মানে বড় ভোজের আয়োজন। সেখানে হরেক রকম নাস্তার পাশাপাশি দুপুরে বা রাতের খাবারে কমপক্ষে ২০ ধরনের মেনু থাকে। মাংসের মধ্যে মুরগী, গরু, খাসি তিনটাই থাকবে। আর মাছের মধ্যে চিতল, বোয়াল, চিংড়ি, রূপচাঁদা তো অনেকটাই কমন ব্যাপার। আর মিষ্টির মধ্যে রসগোল্লা, দইসহ একাধিক আইটেমের মিষ্টি থাকে। ডিআইএ বলছে, বিপুল পরিমাণ সম্মানি নেওয়ার পরও থেমে থাকেনি গভর্নিং বডি। ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল তারা সম্মানি হার পুনঃনির্ধারণ করে। তাতে সভাপতির জন্য সম্মানি রাখা হয় ২৫ হাজার টাকা, প্রত্যেক সদস্য ৬ হাজার টাকা, সভার কাজে সহায়তা করা একজন অফিস সহকারি ৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। একই সভায় সভাপতির মাসিক মোবাইল বিলও ৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়।