চলতি বছরও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষা হবে না । গতবছরের মতো স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার আদলে পরীক্ষা হবে এবং পরীক্ষা শেষে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে সনদ দেয়া হবে।
তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী অষ্টম শ্রেণির আগে কোনো ধরনের পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণের বিধান নেই। এবার এ বিষয়টিকে সামনে এনে পরীক্ষাটি বন্ধ করা হচ্ছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাবলিক রিলেশন্স অফিসার মাহবুবুর রহমান তুহিন সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানিয়ে বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী অষ্টম শ্রেণির আগে কোনো ধরনের পাবলিক পরীক্ষা না থাকায় চলতি বছর থেকেই প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিএসসি) পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে । সম্প্রতি এমন একটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অচিরেই এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
মন্ত্রণালয়ের সচিব আমিনুল ইসলাম খানও সাংবাদিকদের পরীক্ষা বাতিলের বিষয়টি জানিয়েছেন।
এই পরীক্ষা আয়োজনে অভিভাবকদের পক্ষ থেকে ব্যাপক আপত্তি আসে। কিন্তু সরকার এসব আপত্তি আমলে না নিয়ে এই পরীক্ষা চালিয়ে যেতে থাকে। যদিও করোনার কারণে ২০২০ এবং ২০২১ সালে এই পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছিল।
পরীক্ষা বাতিলের সংবাদ যখন প্রকাশিত হবে তখন অভিভাবক এমনটি শিক্ষকদের মধ্যেও একধরণের উচ্ছ্বাস দেখা দেবে।
বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতিবছর এই পরীক্ষাটি আয়োজন করে থাকে। এর যাত্রা শুরু হয় ২০০৯ সালে প্রাথমিক সমাপনি পরীক্ষার মাধ্যমে। ২০০৯ সালে দেশব্যাপী প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় গড় পাসের হার ছিল ৮৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমী -ন্যাপ প্রণীত অভিন্ন প্রশ্নের মাধ্যমে সারা দেশে একইসময়ে এই পরীক্ষার আয়োজন করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। অন্যান্য স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা (জে.এস.সি, এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি) বাংলাদেশের শিক্ষাবোর্ডসমূহ কর্তৃক আয়োজিত হলেও কেবল প্রাথমিক ও সমমানের পরীক্ষাগুলো আয়োজন করে থাকে মন্ত্রণালয়।
অন্যদিকে এদিকে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন এনে প্রণয়ন করা প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাক্রমের রূপরেখার আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এই রুপরেখা অনুযায়ী প্রথম থেকে তৃতীয় পর্যন্ত কোন পরীক্ষা থাকবে না। পুরোটাই মূল্যায়ন হবে সারা বছর ধরে চলা বিভিন্ন রকমের শিখন কার্যক্রমের ভিত্তিতে। এছাড়া ৫ম শ্রেণিতে গিয়ে এমন ধরণের কোন (প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ) পরীক্ষার কথা নেই।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে (পাইলটিং) বাস্তবায়ন শেষে আগামী বছর থেকে বিভিন্ন শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম পর্যায়ক্রমে চালু হবে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণি; ২০২৪ সালে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণি; ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে চালু হবে নতুন শিক্ষাক্রম। এরপর উচ্চমাধ্যমিকের একাদশ শ্রেণিতে ২০২৬ সালে এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে ২০২৭ সালে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে।