বিরোধী দলে নয়, সরকারে অংশীদার হতে চায় জামায়াতে ইসলামী
আগামী জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসার কোনো পরিকল্পনা নেই জামায়াতে ইসলামী’র। দলটির শীর্ষ নেতারা আশাবাদী—তারা এবার সরকার গঠনের অংশীদার হবে, যদিও বাস্তবে ভোটের হিসাব তেমন নয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপিই এককভাবে সবচেয়ে বেশি আসন পাবে, আর তাই ক্ষমতার অংশীদার হতে বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতায় আগ্রহী জামায়াত।
সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের দমন-পীড়ন, মামলা-হামলা ও আর্থিক ক্ষতির অভিজ্ঞতার কারণে জামায়াত কোনোভাবেই বিরোধী দলে বসতে চায় না। তারা মনে করে, এতে সাংগঠনিকভাবে ক্ষতি হবে। বরং বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা করে বেশি আসন পাওয়া গেলে সংসদে তাদের প্রভাব বাড়বে এবং ভবিষ্যতের জন্য রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি হবে।
জামায়াতের নীতিনির্ধারণী মহলে এখন এ নিয়েই আলোচনা চলছে—বিএনপির জাতীয় সরকারের অংশীদার হিসেবে কেবিনেটেও জায়গা পাওয়া গেলে তা হবে দলের জন্য বড় সাফল্য।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে পারবে কি না, তা এখনো অনিশ্চিত। তবে সূত্র বলছে, তারা কিছু আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এতে তারা ৩৫ থেকে ৬০টি আসনে জয় পেতে পারে বলে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ হিসাব।
জামায়াতের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র মনে করে, বিরোধী দলে গেলে সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলতে হবে, যা তাদের রাজনৈতিক অবস্থানকে জটিল করবে। কারণ তখন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও সরকারের সমালোচক হবে—ফলে জামায়াতকে পরোক্ষভাবে বিএনপির বিপক্ষে অবস্থান নিতে হতে পারে। এই পরিস্থিতিকে তারা ‘আত্মঘাতী রাজনীতি’ বলে মনে করছে।
জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, “জাতীয় পার্টি ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে সহযোগিতা করেছে। জনগণ তাদের আর দেখতে চায় না।”
তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগের ছদ্মবেশী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জনগণ চিহ্নিত করে প্রতিহত করবে।
অন্যদিকে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, “জামায়াত কেন বিরোধী দলে যাবে? আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে সরকার গঠন করব, ইনশাআল্লাহ।”
তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগের বর্ণচোরা প্রার্থীরা জনসমক্ষে টিকতে পারবে না। জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।”