শরিফুল ইসলাম
প্রকাশ : নভেম্বর ১৬, ২০২৫
অনলাইন সংস্করণ

‘শিক্ষার্থীদের শুধু ধর্মীয় জ্ঞানে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না’ — মাদ্রাসা বোর্ড চেয়ারম্যান

মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড

বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মিঞা নূরুল হক বলেছেন, মাদ্রাসা শিক্ষা আর অবহেলিত থাকবে না। আধুনিক যুগের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে নতুন কাঠামো ও দৃষ্টিভঙ্গিতে এগিয়ে নেওয়া হবে।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) মানিকগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে মানিকগঞ্জ ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের আয়োজিত বর্ণাঢ্য রিইউনিয়ন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

চেয়ারম্যান আরও বলেন, আজকের শিক্ষার্থীদের শুধু ধর্মীয় জ্ঞানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। প্রযুক্তি, দক্ষতা, মানবিকতা এবং নেতৃত্বগুণের বিকাশ ঘটিয়ে তাদের আধুনিক শিক্ষার মূলধারায় এগিয়ে নিতে হবে। সরকারও মাদ্রাসা শিক্ষাকে সমান গুরুত্ব ও মর্যাদার সঙ্গে এগিয়ে নিতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে।

রিইউনিয়ন উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক সরকার মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল প্রফেসর মো. ওবায়দুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বধর্মতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবু সায়েম এবং ইবনে সিনা হাসপাতালের ডিজিএম মুহাম্মদ জাহিদুর রহমান।

অনুষ্ঠানে নূর মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন মানিকগঞ্জ কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আতিকুর রহমান, মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন, হাফেজ মাওলানা কামরুল ইসলাম, মাওলানা সালাহ উদ্দিন, মাওলানা সামসুদ্দিন এবং প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল মান্নান।

রিইউনিয়নকে ঘিরে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। দিনব্যাপী আয়োজনে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা, স্মৃতিচারণ ও সম্মাননা প্রদান।

মন্তব্য করুন

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ভাতা প্রস্তাবে অনুমোদন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের হাতে

বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বহুল প্রত্যাশিত বাড়ি ভাড়া ভাতার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা। জানা গেছে, আগামী রোববার এ প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

শিক্ষক-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া দাবি করে আসছেন। আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে এ দাবি কার্যকর না হলে ১২ অক্টোবর থেকে লাগাতার আন্দোলনে নামার আলটিমেটাম দিয়েছেন তারা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাড়ি ভাড়ার প্রস্তাবটি চারটি ভিন্ন হার—৫, ১০, ১৫ এবং ২০ শতাংশ আকারে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে। শিক্ষা উপদেষ্টা ইতোমধ্যেই এ প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন। তবে শেষ সিদ্ধান্ত দেবে অর্থ মন্ত্রণালয়; তারা যে হারে সম্মতি দেবে, সে অনুযায়ী বাড়ি ভাতা পাবেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।

এর আগে গত ১৩ আগস্ট জাতীয়করণ প্রত্যাশী এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান জোটের মহাসমাবেশে শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে বাড়ি ভাড়া ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব তোলা হয়। সেই দাবিরই এখন আনুষ্ঠানিক অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে।

মন্তব্য করুন

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বললেন

‘জিয়াউর রহমানের ওপর বিশ্বজুড়ে গবেষণা হয়’

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেছেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এমন এক রাষ্ট্রনায়ক, যার ওপর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা চলছে। কারণ, তিনি স্বাধীনতার পর একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের যে মৌলিক ভিত্তি প্রয়োজন, তা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

সম্প্রতি জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে জিয়া পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

উপাচার্য বলেন, জিয়াউর রহমান স্বাধীন দেশের প্রশাসন, সামরিক বাহিনী ও রাজনীতির মধ্যে একটি কার্যকর ভারসাম্য গড়ে তুলেছিলেন। তিনি বাংলাদেশে ‘উৎপাদনের রাজনীতি’ চালু করেন এবং মানুষকে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ করেন। এর মাধ্যমে জাতিকে আত্মপরিচয়ের শক্তিতে দৃঢ় করেছিলেন।

তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান স্বাধীন ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে দেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যান। তিনি এই দেশে সকলের জন্য কথা বলা ও রাজনীতি করার সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন, যার সুফল আমরা আজও পাচ্ছি।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জিয়া পরিষদ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি প্রফেসর ড. ফকির রফিকুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. এ টি এম জাফরুল আযম।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আহমেদ শিশিম, গাজীপুর জেলা জিয়া পরিষদের সভাপতি মো. ইয়াকুব মিয়া, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. রবিউল ইসলাম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর সরকার।

মন্তব্য করুন

২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা প্রকাশ করেছে সরকার

উপদেষ্টা পরিষদের সভার অনুমোদনের পর ২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা প্রকাশ করেছে সরকার। রোববার (৯ নভেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আগামী বছর সাধারণ ও নির্বাহী আদেশ মিলিয়ে মোট ২৮ দিন সরকারি ছুটি থাকবে। এর মধ্যে ১১ দিন সাপ্তাহিক ছুটি—অর্থাৎ শুক্র ও শনিবারের সঙ্গে মিলে গেছে। চলতি বছরের মতো আগামী বছরও পবিত্র ঈদুল ফিতরে ৫ দিন, ঈদুল আজহায় ৬ দিন এবং শারদীয় দুর্গাপূজায় ২ দিন ছুটি থাকবে।

গত ৬ নভেম্বর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ২০২৬ সালের ছুটির তালিকা অনুমোদন দেওয়া হয়। আগামী বছরের জন্য সাধারণ ছুটি ১৪ দিন এবং নির্বাহী আদেশে ছুটি ১৪ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে সাধারণ ছুটির মধ্যে ৭ দিন ও নির্বাহী আদেশে ঘোষিত ছুটির মধ্যে ৪ দিন সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে পড়েছে।

সাধারণ ছুটির মধ্যে রয়েছে ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ২০ মার্চ জুমাতুল বিদা, ২১ মার্চ ঈদুল ফিতর, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, ১ মে মে দিবস ও বুদ্ধপূর্ণিমা (বৈশাখী পূর্ণিমা), ২৮ মে ঈদুল আজহা, ৫ আগস্ট জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস, ২৬ আগস্ট ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.), ৪ সেপ্টেম্বর জন্মাষ্টমী, ২১ অক্টোবর দুর্গাপূজা (বিজয়া দশমী), ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস এবং ২৫ ডিসেম্বর যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন (বড়দিন)।

নির্বাহী আদেশে ছুটি হিসেবে থাকছে ৪ ফেব্রুয়ারি শবে বরাত, ১৭ মার্চ শবে কদর, ১৯ ও ২০ মার্চ ঈদুল ফিতরের আগে এবং ২২ ও ২৩ মার্চ পরে দুই দিন করে মোট চার দিন, ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ, ২৬ ও ২৭ মে ঈদুল আজহার আগে এবং ২৯ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত পরে তিন দিনসহ মোট পাঁচ দিন, ২৬ জুন আশুরা এবং ২০ অক্টোবর দুর্গাপূজার মহানবমীর দিন।

ঐচ্ছিক ছুটির তালিকায় মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য রয়েছে ১৭ জানুয়ারি শবে মিরাজ, ২৪ মার্চ ঈদুল ফিতরের পরের তৃতীয় দিন, ১ জুন ঈদুল আজহার পরের চতুর্থ দিন, ১২ আগস্ট আখেরি চাহার সোম্বা এবং ২৪ সেপ্টেম্বর ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঐচ্ছিক ছুটির মধ্যে থাকছে ২৩ জানুয়ারি সরস্বতী পূজা, ১৫ ফেব্রুয়ারি শিবরাত্রী ব্রত, ৩ মার্চ দোলযাত্রা, ১৭ মার্চ হরিচাঁদ ঠাকুরের আবির্ভাব, ১০ অক্টোবর মহালয়া, ১৮ ও ১৯ অক্টোবর দুর্গাপূজা (সপ্তমী ও অষ্টমী), ২৬ অক্টোবর লক্ষ্মীপূজা এবং ৮ নভেম্বর শ্যামাপূজা।

খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্য ঐচ্ছিক ছুটি হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ জানুয়ারি ইংরেজি নববর্ষ, ১৮ ফেব্রুয়ারি ভস্ম বুধবার, ২ এপ্রিল পূণ্য বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল পূণ্য শুক্রবার, ৪ এপ্রিল পূণ্য শনিবার, ৫ এপ্রিল ইস্টার সানডে এবং ২৪ ও ২৬ ডিসেম্বর বড়দিনের আগে ও পরের দিন।

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য ঐচ্ছিক ছুটির দিনগুলো হলো ১ ফেব্রুয়ারি মাঘী পূর্ণিমা, ১৩ এপ্রিল চৈত্র সংক্রান্তি (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া দেশের অন্যত্র প্রযোজ্য), ৩০ এপ্রিল ও ২ মে বুদ্ধপূর্ণিমার আগে ও পরের দিন, ২৯ জুলাই আষাঢ়ী পূর্ণিমা, ২৬ সেপ্টেম্বর মধু পূর্ণিমা এবং ২৫ অক্টোবর প্রবারণা পূর্ণিমা (আশ্বিনী পূর্ণিমা)।

পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা ও অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কর্মচারীদের জন্য ঐচ্ছিক ছুটির মধ্যে ১২ ও ১৫ এপ্রিল বৈসাবি এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যান্য সামাজিক উৎসবের দিন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, একজন সরকারি কর্মচারী তার নিজ ধর্ম অনুযায়ী বছরে সর্বোচ্চ তিন দিনের ঐচ্ছিক ছুটি ভোগ করতে পারবেন। বছরের শুরুতেই এ ছুটি ভোগের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমোদন নিতে হবে। সাধারণ, নির্বাহী আদেশ বা সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে যুক্ত করে ঐচ্ছিক ছুটি নেওয়ার সুযোগও রাখা হয়েছে।

এছাড়া যেসব অফিস বা সংস্থার সময়সূচি ও ছুটি নিজস্ব আইন বা বিধিমালার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত, কিংবা যেগুলোকে অত্যাবশ্যক সেবা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে—সেগুলো জনস্বার্থ বিবেচনায় নিজস্ব নিয়ম অনুযায়ী ছুটি ঘোষণা করবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

সূত্র: জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, প্রজ্ঞাপন (৯ নভেম্বর ২০২৫)

মন্তব্য করুন

আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আবারও নিশ্চিত করেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন সময়মতো, অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলকভাবে অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই নির্বাচনে বিপুলসংখ্যক নতুন ভোটার প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। গত ১৬ বছরের স্বৈরতন্ত্রে টানা তিনটি নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার কার্যকর হয়নি।

একই সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা জানান, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় কার্যক্রম স্থগিত থাকায় এবং পরে নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন বাতিল (স্থগিত) করায় আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।

গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী ব্যারোনেস জেনি চ্যাপম্যানের সঙ্গে বৈঠকে এই বিষয়গুলো আলোচনা করা হয়। বৈঠকে আসন্ন নির্বাচন, অবৈধ অভিবাসন, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, রোহিঙ্গা সংকট এবং বিমান ও নৌ খাতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়গুলো নিয়ে কথোপকথন হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের লক্ষ্যে লাখো মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে ‘জুলাই সনদ’ বাংলাদেশে একটি নতুন সূচনা করেছে।

যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী ব্যারোনেস জেনি চ্যাপম্যান প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে চলমান সংলাপ ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাজকে ইতিবাচক হিসেবে মূল্যায়ন করেন। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের অপব্যবহার বেড়েই চলেছে।

এর জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তাঁর সরকার নিরাপদ ও বৈধ অভিবাসন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং বৈধ পথে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধিতে উৎসাহিত করছে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে দুই নেতা মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার গুরুত্ব তুলে ধরেন। মুহাম্মদ ইউনূস জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের তরুণরা আশা হারিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন, তাই তাদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও সহযোগিতা সম্প্রসারণের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বঙ্গোপসাগরে গবেষণার জন্য যুক্তরাজ্যের একটি গবেষণা জাহাজ কিনছে বাংলাদেশ। ব্যারোনেস জেনি চ্যাপম্যান উড়োজাহাজ যোগাযোগ আরও জোরদারের আহ্বান জানান এবং জানান, এয়ারবাস ইন্টারন্যাশনের প্রধান শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবেন।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারা কুক।

মন্তব্য করুন

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ৭ অক্টোবর পর্যন্তই, ৯ অক্টোবর পর্যন্ত নয় : মাউশি

শিক্ষা অধিপ্তরের ছবি ও লোগো
শিক্ষা অধিপ্তরের ছবি ও লোগো

দুর্গাপূজা, বিজয়া দশমী, ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম, প্রবারণা পূর্ণিমা ও লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ৭ অক্টোবর পর্যন্তই বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)।

এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রজ্ঞাপনে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ১২ দিনের অবকাশকালীন ছুটি অনুমোদনের কথা উল্লেখ থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। প্রজ্ঞাপনে এ সময়ের মধ্যে কোনো পরীক্ষা গ্রহণ না করার নির্দেশ থাকলেও ছুটি কোন স্তরের প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য, তা স্পষ্টভাবে বলা হয়নি।

মাউশির মাধ্যমিক শাখার উপপরিচালক মো. ইউনুছ ফারুকী গণমাধ্যমকে বলেন, “ছুটি শুরু হয়েছে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে এবং তা ৭ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। ৮ অক্টোবর থেকে নিয়মিত ক্লাস শুরু হবে। শুধু ৮ ও ৯ অক্টোবর পরীক্ষাবিহীন দিন হিসেবে পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “কিছু প্রতিষ্ঠান ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করেছে, যা সম্পূর্ণ ভুল। মূল উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষাবিহীন দুদিন রাখা, ছুটি বাড়ানো নয়।”

এ কর্মকর্তা জানান, ইতোমধ্যেই অনেক প্রতিষ্ঠান ভুল বুঝতে পেরে ৮ অক্টোবর থেকে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা বা জেলা শিক্ষা অফিসের কোনো নির্দেশনার প্রয়োজন নেই; প্রতিষ্ঠানপ্রধানরা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। বিভ্রান্ত হলে সরাসরি মাউশির সঙ্গে যোগাযোগ করার আহ্বান জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

জকসু নির্বাচন সামনে রেখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডারে পরিবর্তন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (জকসু) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডারে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এ বছর ডিসেম্বর মাসে নির্ধারিত শীতকালীন ছুটি জানুয়ারি মাসে স্থানান্তর করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম জানান, যেসব বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা নভেম্বর কিংবা ডিসেম্বরের মাঝামাঝি শেষ হবে, তাদের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরপরই নতুন সেমিস্টারের ক্লাস শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১০ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদের ডিন ও বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আগামী ১৩ নভেম্বর সিন্ডিকেট সভায় এটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।

উপাচার্য বলেন, “আগামী ২২ ডিসেম্বর জকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতেই একাডেমিক ক্যালেন্ডারে পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিভাগীয় প্রধানদের মতামতের ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে এবং শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভোটার তালিকা নিয়ে অসন্তোষের পরিপ্রেক্ষিতেই জরুরি বৈঠকে সিদ্ধান্তটি গৃহীত হয়।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী—

  • ভোটার তালিকায় আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি: ৯ ও ১১ নভেম্বর

  • চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ: ১২ নভেম্বর

  • মনোনয়নপত্র বিতরণ: ১৩–১৭ নভেম্বর

  • মনোনয়ন দাখিল: ১৭–১৮ নভেম্বর

  • মনোনয়ন বাছাই: ১৯–২০ নভেম্বর

  • প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর

  • আপত্তি নিষ্পত্তি: ২৪–২৬ নভেম্বর

  • ডোপ টেস্ট: ২৭ ও ৩০ নভেম্বর

  • চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা: ৩ ডিসেম্বর

  • মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার: ৪, ৭ ও ৮ ডিসেম্বর

  • প্রচারণা চলবে: ৯–১৯ ডিসেম্বর

  • ভোটগ্রহণ ও ফল ঘোষণা: ২২ ডিসেম্বর

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশা, এই পরিবর্তনের ফলে শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে এবং জকসু নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হবে।

মন্তব্য করুন
×