উপদেষ্টা পরিষদের সভার অনুমোদনের পর ২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা প্রকাশ করেছে সরকার। রোববার (৯ নভেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আগামী বছর সাধারণ ও নির্বাহী আদেশ মিলিয়ে মোট ২৮ দিন সরকারি ছুটি থাকবে। এর মধ্যে ১১ দিন সাপ্তাহিক ছুটি—অর্থাৎ শুক্র ও শনিবারের সঙ্গে মিলে গেছে। চলতি বছরের মতো আগামী বছরও পবিত্র ঈদুল ফিতরে ৫ দিন, ঈদুল আজহায় ৬ দিন এবং শারদীয় দুর্গাপূজায় ২ দিন ছুটি থাকবে।
গত ৬ নভেম্বর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ২০২৬ সালের ছুটির তালিকা অনুমোদন দেওয়া হয়। আগামী বছরের জন্য সাধারণ ছুটি ১৪ দিন এবং নির্বাহী আদেশে ছুটি ১৪ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে সাধারণ ছুটির মধ্যে ৭ দিন ও নির্বাহী আদেশে ঘোষিত ছুটির মধ্যে ৪ দিন সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে পড়েছে।
সাধারণ ছুটির মধ্যে রয়েছে ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ২০ মার্চ জুমাতুল বিদা, ২১ মার্চ ঈদুল ফিতর, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, ১ মে মে দিবস ও বুদ্ধপূর্ণিমা (বৈশাখী পূর্ণিমা), ২৮ মে ঈদুল আজহা, ৫ আগস্ট জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস, ২৬ আগস্ট ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.), ৪ সেপ্টেম্বর জন্মাষ্টমী, ২১ অক্টোবর দুর্গাপূজা (বিজয়া দশমী), ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস এবং ২৫ ডিসেম্বর যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন (বড়দিন)।
নির্বাহী আদেশে ছুটি হিসেবে থাকছে ৪ ফেব্রুয়ারি শবে বরাত, ১৭ মার্চ শবে কদর, ১৯ ও ২০ মার্চ ঈদুল ফিতরের আগে এবং ২২ ও ২৩ মার্চ পরে দুই দিন করে মোট চার দিন, ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ, ২৬ ও ২৭ মে ঈদুল আজহার আগে এবং ২৯ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত পরে তিন দিনসহ মোট পাঁচ দিন, ২৬ জুন আশুরা এবং ২০ অক্টোবর দুর্গাপূজার মহানবমীর দিন।
ঐচ্ছিক ছুটির তালিকায় মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য রয়েছে ১৭ জানুয়ারি শবে মিরাজ, ২৪ মার্চ ঈদুল ফিতরের পরের তৃতীয় দিন, ১ জুন ঈদুল আজহার পরের চতুর্থ দিন, ১২ আগস্ট আখেরি চাহার সোম্বা এবং ২৪ সেপ্টেম্বর ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঐচ্ছিক ছুটির মধ্যে থাকছে ২৩ জানুয়ারি সরস্বতী পূজা, ১৫ ফেব্রুয়ারি শিবরাত্রী ব্রত, ৩ মার্চ দোলযাত্রা, ১৭ মার্চ হরিচাঁদ ঠাকুরের আবির্ভাব, ১০ অক্টোবর মহালয়া, ১৮ ও ১৯ অক্টোবর দুর্গাপূজা (সপ্তমী ও অষ্টমী), ২৬ অক্টোবর লক্ষ্মীপূজা এবং ৮ নভেম্বর শ্যামাপূজা।
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্য ঐচ্ছিক ছুটি হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ জানুয়ারি ইংরেজি নববর্ষ, ১৮ ফেব্রুয়ারি ভস্ম বুধবার, ২ এপ্রিল পূণ্য বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল পূণ্য শুক্রবার, ৪ এপ্রিল পূণ্য শনিবার, ৫ এপ্রিল ইস্টার সানডে এবং ২৪ ও ২৬ ডিসেম্বর বড়দিনের আগে ও পরের দিন।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য ঐচ্ছিক ছুটির দিনগুলো হলো ১ ফেব্রুয়ারি মাঘী পূর্ণিমা, ১৩ এপ্রিল চৈত্র সংক্রান্তি (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া দেশের অন্যত্র প্রযোজ্য), ৩০ এপ্রিল ও ২ মে বুদ্ধপূর্ণিমার আগে ও পরের দিন, ২৯ জুলাই আষাঢ়ী পূর্ণিমা, ২৬ সেপ্টেম্বর মধু পূর্ণিমা এবং ২৫ অক্টোবর প্রবারণা পূর্ণিমা (আশ্বিনী পূর্ণিমা)।
পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা ও অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কর্মচারীদের জন্য ঐচ্ছিক ছুটির মধ্যে ১২ ও ১৫ এপ্রিল বৈসাবি এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যান্য সামাজিক উৎসবের দিন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, একজন সরকারি কর্মচারী তার নিজ ধর্ম অনুযায়ী বছরে সর্বোচ্চ তিন দিনের ঐচ্ছিক ছুটি ভোগ করতে পারবেন। বছরের শুরুতেই এ ছুটি ভোগের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমোদন নিতে হবে। সাধারণ, নির্বাহী আদেশ বা সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে যুক্ত করে ঐচ্ছিক ছুটি নেওয়ার সুযোগও রাখা হয়েছে।
এছাড়া যেসব অফিস বা সংস্থার সময়সূচি ও ছুটি নিজস্ব আইন বা বিধিমালার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত, কিংবা যেগুলোকে অত্যাবশ্যক সেবা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে—সেগুলো জনস্বার্থ বিবেচনায় নিজস্ব নিয়ম অনুযায়ী ছুটি ঘোষণা করবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সূত্র: জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, প্রজ্ঞাপন (৯ নভেম্বর ২০২৫)